Tuesday, February 2, 2010

মনোরঞ্জনের দাবি— স্বর্ণপদক তার!

রৌপ্যপদক জেতার পর সেটা গ্রহণ করার জন্য মঞ্চেই আসতে চাননি মনোরঞ্জন রায়। কেননা এভাবে হার মেনে নিতে হবে ভাবেননি বাংলাদেশের এই ভারোত্তোলক। গতকাল পুরুষদের ৭৭ কেজি ভারোত্তোলনে রৌপ্যজয়ী ক্ষুব্ধ মনোরঞ্জন বলছিলেন, ‘আমাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আসলে হামিদুল নয়, আমিই এই ইভেন্টের স্বর্ণপদক জিততাম। স্বর্ণপদক আমার! কিন্তু আমাকে সেই পদক জেতার সুযোগ দেয়া হয়নি। আমি চেয়েছিলাম ক্লিন অ্যান্ড জার্ক রাউন্ডেও হামিদুলকে টপকে যেতে। কিন্তু আমি বৈষম্যের শিকার। ওরা সুযোগটা আমাকে দিল না। বললো তোমার স্বর্ণপদকের দরকার নেই!’
গতকাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ জিমন্যাশিয়ামে তাইতো চোখের পানি মুছতে মুছতে সাংবাদিকদের সামনে এলেন সেনাবাহিনীর এই সদস্য। ৭৭ কেজি ইভেন্টের স্ন্যাচ রাউন্ডে হামিদুলের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন তিনিই। তুলেছিলেন ১২০ কেজি। উল্টোদিকে হামিদুল তোলেন ১১৭ কেজি। পরে ক্লিন ও জার্ক রাউন্ডেও হামিদুলের সঙ্গে সমান তালে লড়তে থাকেন তিনি। মনোরঞ্জনের ১৩৫ কেজির জবাবে এসে ১৪০ কেজি তুলে আটকে যান হামিদুল ইসলাম। পরে সেটা অতিক্রম করার সুযোগ এসে যায় মনোরঞ্জনের। সেই চ্যালেঞ্জটা নিতেও চেয়েছিলেন এই তরুণ। কিন্তু হামিদুল ও ভারোত্তোলন ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের আপত্তির মুখে নাকি সেটা পারেননি তিনি, ‘দেখুন আমি চেয়েছিলাম চ্যালেঞ্জটা নিতে। কিন্তু ড্রেসিংরুমে হামিদুল চিত্কার করে আমাকে বলেন তুমি থাম এবার। অন্য কর্মকর্তারা বলতে থাকেন তোমার দরকার নেই আর ওজন বাড়ানোর। অনেক হয়েছে! হামিদুল সিনিয়র, স্বর্ণপদক তার জন্য।’
এখানেই থামলেন না ২০ বছর বয়সী এই তরুণ। সঙ্গে যোগ করলেন, ‘আমার মন খারাপ এ কারণে যে, স্বর্ণপদক জেতার এমন সুযোগ বারবার আসে না। দেখুন এখানে ভারত ও পাকিস্তান ছিল না। এই সুযোগটা কাজে লাগাতে পারতাম আমি। কিন্তু আমাকে পারফরম করতে দেয়া হলো না।’
তারপরও রৌপ্যপদক তো এসেছে! সেটাও কম কী? মনোরঞ্জন রায় বলছিলেন, ‘যা কিছুই হোক এটা অবশ্যই আমার জন্য স্মরণীয় একদিন। আজ মা বেঁচে থাকলে হয়তো অনেক খুশি হতেন। আমার এই পদক আর কারও জন্য নয়, এটি শুধুই আমার স্বর্গীয় মায়ের জন্য!’

No comments: