Friday, December 3, 2021

চলুন জেগে উঠি

 


-বুনোফুল

ভুল ভাঙিয়ে মিষ্টি হাসি কন্যার,  ‘বাবা, এটা পর্তুলিকা!’

-নাম যাই হোক, বারান্দায় মিষ্টি হেসে ক্ষণিকের এই নতুন অতিথি যেন বলছে, ‘সব যন্ত্রণা ভুলে আমার মতোই হেসে ওঠো। জীবন ছোট, আমার মতোই ছোট। যতোটা সময় বাঁচবো, দেখো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আমি। শেখো। অপূর্ণতা ভুলে যাও। হাহাকার সরিয়ে বেঁচে থাকো, বাঁচার মতো!’

চলুন জেগে উঠি নতুন প্রাণে, শুভ সকাল...

Wednesday, August 18, 2021

সাঁঝবাতির রূপকথারা

বিশ্বাস খুঁইয়ে মেয়ের কাছে কি ছোট হয়ে যাবে বাবা? আনন্দ, একাকিত্ব, বিচ্ছিন্নতা, ধুসর, সবুজ কালো রঙ... তারপর কোন এক দিনে বাবার কাছে ফিরে আসে টুকুন! বাবা তখন বসে শ্যাওলাসমাকীর্ণ পুকুরঘাটে। চিত্রকর বাবাকে দেখে চমকে উঠে কন্যা। ভেঙে যাওয়া বাবা কী তবে পালাতে চান?

বিশ্বাস-অবিশ্বাসের আলো-আঁধারে টুকুনকে দেখে তার মনে হয় যেন হাজার হাজার ফিট জলের গভীর থেকে ওঠে আসা। বাবা তার কন্যার গায়ে লেগে থাকা শ্যাওলা, বালি, জলের দাগ মুছতে মুছতে তার ভেতর এমন একটা দীঘির দেখা পান যেখানে ডুব দিলে তাকে আর টুকুন খুঁজেই পাবে না!
কবিতার মতো এক ছবি- সাঁঝবাতির রূপকথারা। দুপুর থেকেই চোখে ভাসছে দৃশ্যের পর দৃশ্য। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় চলেই গেলেন। এমন এক দীঘিতে ডুব দিলেন যে হারানো রূপকথারা টুকুনের জীবনে ফিরলেও তাকে আর খুঁজেই পাওয়া যাবে না, পুরনো শহরে কিংবা নতুন কোন চ্যালেঞ্জে!


বেশ কয়েকদিন ধরেই শঙ্কায় দিন কাটছিল সবার। অনেকদিন ধরে চাইছিলাম- এমন কিছু না হোক। মিরাকলের কাছেই সমর্পণ ছিল।
তারপরও যখন হয়নি.. যখন তিনি, একদম তারই মতো করে বলে গেলেন, ''আজ তবে আসি'', তখন বরং চলুন এই চলে যাওয়া সেলিব্রেট করি। অনেক দিয়েছেন আপনি। মৃত্যুর মধ্য দিয়ে আজ ১৫ নভেম্বর অমরত্ব পেয়ে গেলেন, সৌমিত্র দা।
আমি আসলে আপনার কাজকে আলাদা করতে পারিনা। তরুণ সৌমিত্র, যুবক সৌমিত্র কিংবা শেষ বয়সের সৌমিত্র। অতিনাটকীয়তা রেখে গলার স্বর, কথা বলার ভঙ্গি, গভীর নির্মোহ দৃষ্টি, সব সময়ই টেনেছে! টানবে আজীবন!
চলে গেলেন, এবার চিরদিনের জন্য বেঁচে থাকুন প্রতিটি বাঙালির ঘরে... অপু, অমল, ময়ূরবাহন, ক্ষিদ্দা, শ্যাম, নরসিংহ, গঙ্গাচরণ, সন্দীপ, অঘোর, সুবীর কিংবা চিরচেনা ফেলুদা হয়েই।

https://www.facebook.com/aapon/videos/10158052443426775

পথের পাঁচালী

''নাছোড়বান্দা স্মৃতি সাদা আর কালো জুড়ে অপুর পায়ের ছাপ ডুবছে বাঁশির সুরে..'' 'পাশ দিয়ে পথ গেছে দূরের থেকেও দূরে'; এই আমাদের গ্রাম। আমার হৃদয়ের খুব কাছের কাঁচা মাটির ধুলো ওড়া পথ। ধানের জমি, ছোট্ট আম বাগানের পাশ দিয়ে একেবেঁকে যাওয়া হারানো শৈশব। সকাল, মধ্য দুপুর কিংবা শেষ বিকেলের আলোয় এই পথ ধরে কতোবার যে হারিয়ে গেছি, হিসেব নেই! কাঁচা আমের আটি দিয়ে দেয়ালে দেয়ালে লিখেছি, ''আমিই সেই অপু।'' পথের পাঁচালী' তো আমারই গল্প। 
সারি সারি কাশফুল পেরিয়ে তাইতো একদিন আমিও ছুটে গেছি, সেই ধোয়া উড়িয়ে যাওয়া চলন্ত ট্রেন দেখবো বলে। লেবুর পাতা করমচা! আহ, আমার সেই মুঠোর ফাঁক গলে হারিয়ে যাওয়া শৈশব। 'সময়ের রেলগাড়ি', সব এলোমেলো করে দিয়ে গেল। কতো আকুতি, শত অনুনয়-ফিরেও আসে না আর! 
 সেই সিথি কাটা চুলে স্মৃতির পথ ধরে হেটে চলা 'অপু' হয়ে উঠা হয় না আমার, হবেও না আর এই জনমে...

অনুধাবন

টাকার চেয়ে মূল্যবান অনেক কিছুই আছে পৃথিবীতে। কিন্তু সেই ''অনেক কিছু'' পেতে হলেও টাকার দরকার!

হয়ে উঠুন বর্তমানের আপনি

একজন মানুষের জানা দরকার জীবনের শেষ ধাপ কোথায়? আমরা যদি একটা ধাপে প্রয়োজনের চেয়েও বেশি সময় থাকি তাহলে আমরা অন্য ধাপগুলোর আনন্দ আর উদ্দেশ্য থেকে বঞ্চিত হবো। জীবনের এইসব ধাপগুলো পূর্ণ করা, দরজা বন্ধ করা, অধ্যায়ের ইতি টানা, আসলে যাই বলা হোক না কেন আসল কথা হলো যে অতীত, যে সময় ফুরিয়ে গেছে তাকে পেছনে ফেলে আসা। সম্পর্ক ভেঙে গেছে? চাকরি চলে গেছে? বাবা-মার বাসা থেকে বের হয়ে আসতে হয়েছে? কিংবা অনেক অনেকদিনের গড়া বন্ধুত্বা এক মুহূর্তে শেষ হয়ে গেছে? কেন চাকরি গেল, কেন সম্পর্ক ভাঙলো, কেন সব শেষ? ‘কেন’-র ভুবনে ডুব দিয়ে অনেক সময় পার করা যায়। অনেক অনেক মুহূর্ত চিন্তা করে কাটিয়ে দেয়া যায়। জীবনের এইসব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারগুলো কেন হঠাৎ আচমকা ধুলোর সঙ্গে মিশে গেল সেই কারণ খুঁজে বের করার আগে আপনি হয়তো একটুও এগোতো চাইবেন না, পা চলতে চাইবে না! ‘সব শেষ’ নামের হাহাকার সেই ‘কেন’-র উত্তর খুঁজতে আপনাকে অহর্নিশ পাগল করে দেবে। কিন্তু এমন আচরণ আপনাকে বাবা-মা, স্বামী-স্ত্রী, ভাই-বোন আর সন্তানের ওপর চাপ তৈরি করবে। সেই চাপ অসহনীয় হয়েও যেতে পারে। আসলে সবাই তাদের জীবনের ধাপগুলো শেষ করছে, করেছে। পাতা উল্টাচ্ছে, জীবনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে একটু একটু করে। আর সেই তারাই আপনাকে এক জায়গায়, একই বৃন্তে আর একটাই প্রশ্নের সামনে আটকে থাকতে দেখে মন খারাপ করবে। সত্যি বলতে কী, যা চলে যায় তাকে চলে যেতে দেওয়াই উচিত। সেটা করতে গিয়ে যত তীব্র বেদনাই হোক অতীত সেই সম্পর্ক, স্মৃতির স্যুভেনিগুলো ভেঙে দিন, সরিয়ে ফেলুন, প্রয়োজনে দান করে দিন কোনো এক অনাথ আশ্রমে, বিক্রি করে দিন, স্রেফ ভুলে যান। এই আলো-বাতাস, দৃশ্যমান পৃথিবীর সবকিছুই হলো অদৃশ্য পৃথিবীর ছায়া। আমাদের যাপিত জীবনে কিছু স্মৃতি ফেলে দেয়ার অর্থ একটাই-নতুন কিছু স্মৃতির জন্য তৈরি আপনার মন, আপনি নিজে। যে চলে গেছে, চলে যেতে চায় তাকে ছেড়ে দিন। সেই সব মানুষ আর তাদের থেকে নিজেকে মুক্ত করুন। আমার মনে হয় জীবনটা স্রেফ তাস খেলার মতো। আসলে কার্ডগুলো আমরা কেউ চিনে রাখি না। তাই কখনও আমরা জিতে যাই, আবার কখনও বা হেরে যাই। কোনো প্রতিদান আশা করবেন না, না কোনো প্রতিদানই নয়। বাহ-বা-র আশাও করবেন না। আপনার মেধার মূল্যায়ন হচ্ছে কী হচ্ছে না, ভালোবাসা পেলেন কী পেলেন না ভাবার দরকার নেই। কিছু একটা হারাতে আপনি কতটা কষ্টে নীল হয়েছেন, কতটা ভুগেছেন? -অনুভূতির জানালা খুলে, আবেগের টেলিভিশন খুলে সেই অনুষ্ঠান বারবার দেখা বন্ধ করুন। এসব কিছু আপনার মনকে বরং বিষন্ন করে দেবে। একটু একটু করে নিজের অজান্তেই আরও বেশি একা হয়ে উঠবেন আপনি। এছাড়া আর কিছুই হবে না, হয়ও নি কোনোদিন! ঠিক না থাকা কাজের প্রতিশ্রুতি, ভেঙে যাওয়া প্রেম এসব মেনে না নেয়ার মতো বোকামি আর ক্ষতিকর কিছুই হতে পারে না। জীবনের নতুন এক অধ্যায় শুরুর আগে আগের অধ্যায়টিকে শেষ করতেই হবে। হাসিমুখে নিজেকে বলুন-যা চলে গেছে তা একেবারেই গেছে, ফিরে আর আসবে না কখনও। যে জিনিস কিংবা যে মানুষটাকে ছাড়া একসময় বেঁচেছিলেন সেই সময়ের কথা ভাবুন। সবকিছুই প্রতিস্থাপনীয়। অভ্যেস আর প্রয়োজন এক ব্যাপার নয়। কথাগুলো অবশ্য বলে ফেলা গেল অনায়াসে মেনে নেয়া কঠিন, কিন্তু অসম্ভব নয়। একটু একটু করে প্রতিদিন জীবনের চক্রটা পূরণ করুন। গর্ব, অপ্রাপ্তি, অক্ষমতা আর অহংবোধের জন্য নয়, আপনার জীবনের সঙ্গে ব্যাপারগুলো যায় না সেই কারণে কাজগুলো করুন। আর দরজা বন্ধ করে দিন, প্লেয়ারের সিডি বদলান, ঘরটা পরিস্কার করুন, ধুলো-বালি ঝেড়ে ফেলার এইতো সময়। অতীতের ‘আমার আমি’র মধ্যে আটকে না থেকে বরং হয়ে উঠুন ‘বর্তমানের আপনি...’ ................................................................ -পাওলো কোয়েলহোর ব্লগে পাওয়া লেখাটি স্বাধীনভাবে অনুবাদ করেছিলাম বেশ কিছুদিন আগে। অনেক প্রিয় এই লেখাটা তুলে রাখলাম টাইমলাইনে।

becomes better too

“When we strive to become better than we are, everything around us becomes better too.” —Paulo Coelho

চাকার খাঁজে আশ্রয়

আফগানিস্তানের আকাশে উড়ন্ত বিমান থেকে দুজনের পড়ে যাওয়ার দৃশ্যটা ভুলতে পারছি না। সোমবার দুপুরে কাবুল বিমানবন্দরে ঘটেছে এই দুর্ঘটনা। দেশ ছাড়তে বিমানের
নেন এই দুই আফগান। বিমান আকাশে উড়তেই ছিটকে পড়লেন তারা! তারার মতো ঘসে পড়ল দুটি তাজা প্রাণ। মর্মান্তিক দুর্ঘটনার ভিডিও ফুটেজ রীতিমতো ভাইরাল! সত্যি বলতে অদ্ভুত এক সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি আমরা। কতোরকম রাজনীতি যে গোটা বিশ্বজুড়ে! জানি না কী হচ্ছে, তবে এটুকু বুঝতে পারছি.. ফের এই রাজনীতির শিকার শুধু সাধারণ মানুষ। যারা একটু ভাল থাকার প্রলোভন সঙ্গী করে বেঁচে থাকতে চায়...

Sunday, August 8, 2021

চিরকাল বলে কিছু নেই

ফরএভার বলে কিছুই হয় না। চিরতরে, চিরকাল বলে কিছু নেই। ২১ বছর, দুই দশকের দৃঢ় এক বন্ধন, একটা পরিবার আর আকাশ ছোঁয়া আবেগ সব নাই হয়ে গেল এক মুহূর্তে। কেউ কাউকে ছাড়তে চায় না, একসঙ্গে থাকতে চায় একটা জীবন; অথচ অদৃষ্টির কী পরিহাস, কী একটা যে হয়ে গেল। 

চোখের জলেই লেখা হয়ে থাকল ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিচ্ছেদের গল্প... কান্নার আড়ালে তোমার ওই অভিমানী মুখ কোথায় যেন আশার প্রদীপটাও জ্বালিয়ে দিল আজ। সব পাখি যেমন ঘরে আসে, তেমন করেই তুমি একদিন ফিরবে জানি... এই এখানেই যেখানে তোমার হৃদয়টা রেখে গেলে। যেখানে প্রতিটা ঘাস তোমার চেনা, যেখানে হাজারো রাতজাগা রোমাঞ্চের কাব্য লিখে গেছো সোনায় মোড়ানো দুই পায়ে। 

আমরা খুঁজবো তোমাকে... ফের আরেকবার। কাঁদলে, কাঁদালে... কী একটা হাহাকার যে ছড়িয়ে দিলে আজ এই বিদায় বেলায়। আহা, বড্ড বেশি মিস করবো তোমাকে, প্রিয় লিও