বিশ্বাস খুঁইয়ে মেয়ের কাছে কি ছোট হয়ে যাবে বাবা? আনন্দ, একাকিত্ব, বিচ্ছিন্নতা, ধুসর, সবুজ কালো রঙ... তারপর কোন এক দিনে বাবার কাছে ফিরে আসে টুকুন! বাবা তখন বসে শ্যাওলাসমাকীর্ণ পুকুরঘাটে। চিত্রকর বাবাকে দেখে চমকে উঠে কন্যা। ভেঙে যাওয়া বাবা কী তবে পালাতে চান?
বিশ্বাস-অবিশ্বাসের আলো-আঁধারে টুকুনকে দেখে তার মনে হয় যেন হাজার হাজার ফিট জলের গভীর থেকে ওঠে আসা। বাবা তার কন্যার গায়ে লেগে থাকা শ্যাওলা, বালি, জলের দাগ মুছতে মুছতে তার ভেতর এমন একটা দীঘির দেখা পান যেখানে ডুব দিলে তাকে আর টুকুন খুঁজেই পাবে না!
কবিতার মতো এক ছবি- সাঁঝবাতির রূপকথারা। দুপুর থেকেই চোখে ভাসছে দৃশ্যের পর দৃশ্য। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় চলেই গেলেন। এমন এক দীঘিতে ডুব দিলেন যে হারানো রূপকথারা টুকুনের জীবনে ফিরলেও তাকে আর খুঁজেই পাওয়া যাবে না, পুরনো শহরে কিংবা নতুন কোন চ্যালেঞ্জে!
বেশ কয়েকদিন ধরেই শঙ্কায় দিন কাটছিল সবার। অনেকদিন ধরে চাইছিলাম- এমন কিছু না হোক। মিরাকলের কাছেই সমর্পণ ছিল।
তারপরও যখন হয়নি.. যখন তিনি, একদম তারই মতো করে বলে গেলেন, ''আজ তবে আসি'', তখন বরং চলুন এই চলে যাওয়া সেলিব্রেট করি। অনেক দিয়েছেন আপনি। মৃত্যুর মধ্য দিয়ে আজ ১৫ নভেম্বর অমরত্ব পেয়ে গেলেন, সৌমিত্র দা।
আমি আসলে আপনার কাজকে আলাদা করতে পারিনা। তরুণ সৌমিত্র, যুবক সৌমিত্র কিংবা শেষ বয়সের সৌমিত্র। অতিনাটকীয়তা রেখে গলার স্বর, কথা বলার ভঙ্গি, গভীর নির্মোহ দৃষ্টি, সব সময়ই টেনেছে! টানবে আজীবন!
চলে গেলেন, এবার চিরদিনের জন্য বেঁচে থাকুন প্রতিটি বাঙালির ঘরে... অপু, অমল, ময়ূরবাহন, ক্ষিদ্দা, শ্যাম, নরসিংহ, গঙ্গাচরণ, সন্দীপ, অঘোর, সুবীর কিংবা চিরচেনা ফেলুদা হয়েই।
https://www.facebook.com/aapon/videos/10158052443426775
No comments:
Post a Comment