আজ কিছুই ভালো লাগছে না! মন খারাপের চেয়েও যেন বেশি কিছু গ্রাস করেছে আমাকে। আসলে গতকাল রাত থেকেই বিষাদের চেয়েও যেন বেশি কিছু ছুঁয়ে যাচ্ছে আমায়। সত্যি কিছুই ভালো লাগছে না! এটাই কি আসলে একাকিত্ব?
বিদায়! বিষাদ লেগে থাকা এক শব্দ। সেই বিদায়ের বিষাদই আমাকে আজ সকাল থেকে আরো বেশি কষ্ঠ দিচ্ছে। আজ আমার বেশ কয়েকজন বন্ধুকে বিদায় বলতে হবে। আসলে বেশ কয়েকজন না বলে একজন বলাটাই সত্য। বাকীদের সঙ্গে তেমন কথা হলো কোথায়? মনোজ, আমার নতুন বন্ধু। ঢাকায় এসেছেন দণি এশিয়ান গেমস কাভার করতে। মনোজ কাজ করে নেপালের জাতীয় দৈনিক...। কাঠমন্ডুর এই মানুষটির সাথে পরিচয় গেমসের প্রথম দিনই। এরপর প্রতিদিনই টুকটাক কথা হতো...
দুজনের পারিবারিক কথাও হতো মাঝে মধ্যে! ও বিয়ে করেছে। মনোজের দুই বছরের একটা মেয়ে আছে! এই গল্প করতো প্রায়ই। মেয়ের জন্য কি কিনে নেয়া যায় এই পরিকল্পনা করতো আমার সাথে।
সত্যি বলতে কী গত দুই সপ্তায় তেমন আবেগ জন্মানোর কথা নয় ভিনদেশী এই মানুষটির জন্য। তারপরও আজ যখন মনোজ বললো যে ও কাল সকালেই চলে যাচ্ছে কেমন যেন করে উঠলো আমার মন! আবার কি কখনো দেখা হবে ভেজিটেরিয়ান ওই মানুষটির সাথে? আবার কি কখনো কোন দিন হাসিমুখে বলবে ‘আপন নট ফিনিশট ইয়েট ইউর রিপোর্ট?’
ইদানিং আমি অল্পতেই আবেগী হয়ে উঠছি। কাউকে বিদায় বলতে গেলে গলার কাছে এক ধরনের যন্ত্রণা অনুভব করি! বন্ধু-শত্র“ কাউকেই ‘গুডবাই’ বলতে চাই না! মনে হয় চোখের আড়াল হলেই সব শেষ!
অথচ গত একবছর ধরে যা হচ্ছে আমার সঙ্গে তাতে উল্টোটাই হতে পারতো! জীবন যন্ত্রণার শেষটা বুঝি দেখে ফেলেছি! তারপরও কেন জানি আজ মনোজ যখন বলবো ‘যাই’-তখন মনটা হু-হু করে উঠলো! তাকে শুধু বললাম ‘হ্যাভ এ গুড জার্নি, সি ইয়া ম্যান সাম টাইম সাম হোয়ার ইফ উই এলাইভ...’
এই কথা বলে এক মুহুর্ত দেরি করিনি। এক মুহুর্ত থাকলে হয়তো লজ্জায় পড়তে হতো। মনোজ ভাবতো ‘ভিনদেশী এই মানুষটা কাদছে কেন?’
রাতের অন্ধকারকে এখন বন্ধু মনে হচ্ছে। আমার ‘লজ্জা’ আড়াল করে দিয়েছে রাতের কালো অন্ধকার...।
না এখন আর আবেগ আড়াল করার কোন মানে হয় না। নোনা জল গড়িয়ে পড়ুক ইচ্ছেমত...
No comments:
Post a Comment