রাজ্য এবং রাজকন্যা-দুটোর হাতছানিই ছিল তার সামনে! সুপার কাপে যেভাবে খেলছিলেন, তাতে টুর্নামেন্ট সেরার দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন তিনি। এরপর ফাইনাল। কোটি টাকার সেই ম্যাচটি জিততে পারলে রাজকন্যা, মানে লাল টুকটুকে ওই গাড়ি এবং রাজ মানে সুপার কাপ। দুটোই মিলত!
কিন্তু চেনা ছকের মতো হিসেবটা এখানে ঠিক মিলল না। টুর্নামেন্ট সেরার গাড়ি পেলেন এমিলি। কিন্তু দল পেল না সুপার কাপ। কোটি টাকার টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার সপ্তাহহখানেক পরও তাই আপে থাকল তার, ‘আসলে টুর্নামেন্ট যখন শুরু হয়েছিল, তখন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মিশন নিয়েই শুরু করেছিলাম। আপনাদের সবার বিশে›ষণেই তো আমাদের ফেভারিট ধরা হয়েছিল। ফাইনাল পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল; কি কিন্তু আসল ম্যাচেই পাল্টে গেল সবকিছু।’
ফাইনালের ™ি^তীয় মিনিটে ইনজুরিতে পড়লেন। খেললেন মাত্র ৩৪ মিনিট। আপনার ইনজুরিই কি সব শেষ করে দিল?
Ñআমি ঠিক সেভাবে দেখছি না। দেখুন, ট্রফি জিততে হলে কিল্কপ্পস্টুু ভাগ্যেরও সহায়তা চাই। ফাইনালেও ভালো খেলেছি আমরা; কিল্কপ্পস্টুু গোল পাইনি। ব্যক্তিগতভাবে আমিও হতাশ। ইনজুরি শেষ করে দিল সবকিছু। গাড়িতে উঠলেই হয়তো দুঃখটা তাড়াবে আমাকে।
গাড়ি হলো এবার...
কথায় আছে বাড়ি, গাড়ি তারপর নারী...! বাড়ি তো ছিলই, এখন পেলেন গাড়ি! বিয়ে করছেন কবে?
এমন প্রশল্ফু শুনে রীতিমত লাজুক, বলতে থাকলেন, ‘না, সেসব নিয়ে এখনো ভাবছি না! কাব ও জাতীয় দলে আরো কিছুদিন খেলতে চাই। এরপরই ভেবে দেখব এসব।’ তবে একটা ড্রাইভিং লাইসেন্সের কথা ভাবতে হচ্ছে এখনই। না, হলে যে ‘মোস্টল্কল্ট ভ্যালুয়েবল প্টেল্ট›য়ারে’র গাড়িটা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ভবনের গ্যারেজেই শোভা পাবে। তবে আর বেশিদিন নয়, জাতীয় দলের ব্যস্টল্টস্টুতা একটু কমলেই ড্রাইভিং শিখে নেবেন এমিলি। এরপরই ইচ্ছে আছে, একদিন এই গাড়ি নিয়ে হাজির হয়ে যাবেন গ্রামে, শৈশবের বল্কপ্প¦ন্ধুদের নিয়ে ঘুরে বেড়াবেন, ইচ্ছেমত...
বেড়ে ওঠা...
এমিলি বেড়ে উঠেছেন এমন একটা পরিবেশে, যেখানে তিনি ফুটবলার না হলেই হয়তো অবাক হতে হতো। তার বাবা ইদ্রিস আলী পিরোজপুর অঞ্চলের সেরা ফুটবলার ছিলেন। প্রায়ই ভাড়াটে ফুটবলার হিসেবে তাকে নিয়ে যাওয়া হতো; কিল্কপ্পস্টুু ইদ্রিস আলীর স্টল্ট^পল্ফু পহƒরণ হয়নি। বরিশাল ছেড়ে উঠে আসতে পারেননি ঢাকায়। খেলা হয়নি জাতীয় দলে।
তবে আসলেই কি স্টল্ট^পল্ফু পহƒরণ হয়নি? প্রত্য না হোক পরোভাবে হয়েছে ঠিকই। ৫ সল্কপ্পস্টুানকে দিয়ে নিজের অপ্রাপ্টিল্টস্টু ঘুচিয়েছেন তিনি। তার বড় দুই ছেলেÑলিটন এবং সাকিল খেলছেন ব্রাদার্স ইউনিয়নে। এরপরই এমিলি, তিনি তো এখন দেশসেরা স্টল্কল্ট্রাইকার। চতুর্থ সল্কপ্পস্টুান খেলছেন খুলনা আবাহনীতে। এই পরিবারের সবার ছোটটি এখন পড়ছেন বিকেএসপিতে। শুধু নিজের পরিবারই নয়, এমিলির চাচা-মামারাও ছিলেন ফুটবলার।
তাই তো সেই ছোটবেলায় তার পায়ে উঠেছিল বল। উদয়কাঠি গ্রামের মানুষ আসলে ফুটবলপাগল। বিকাল হতেই তার ছুটে যেতেন মাঠে। এমিলিও অনুসরণ করতেন তাদের। বাবার যেহেতু আপত্তি ছিল না; মুক্ত মনে খেলে যেতেন ফুটবল। এভাবেই যখন এগিয়ে যাচ্ছিল সবকিছু; তখন বল্কপ্প¦ন্ধুরা এমিলিকে বলতে থাকে, ‘তুই এবার ঢাকা চলে যা। বিকেএসপিতে ভর্তি হ।’
বাবাকে এই ইচ্ছার কথা জানাতেই নিয়ে আসেন ঢাকায়। ১৯৯৯-এ ভর্তি করিয়ে দেন বাংলাদেশ ক™ব্দীড়া শিা প্রতিষ্ঠানে। যতটা সহজে বলা হলো এটি, বিষয়টা ততো সহজ ছিল না। রীতিমত ভর্তিযু™¦ন্ধ শেষে পাস সার্টিফিকেট পেয়েছেন তিনি। এরপর পাটিগণিতের সহƒত্রের মতো দুইয়ে দুইয়ে চার করে এগিয়ে চলছে জীবন। যেমনটা বলছিলেন এমিলি, ‘আসলে আমার মাথায় সবসময় বাবার স্টল্ট^পল্ফু পহƒরণ করতে হবেÑএমন একটা তাগিদ ছিল। এভাবেই এক সময় আমি অনহƒর্ধ্ব ১৪ দলে ডাক পাই। এরপর অনূর্ধ্ব-১৬, সে সময় আমি হাসানুজ্জামান বাবলু স্যারের নজরে পড়ি আমি। ২০০১-এ আমি ডাক পাই অনহƒর্ধ্ব-২০-এ। যদিও তখন আমার বয়স একেবারে কম। সে সময় জর্জ কোটান আমার অনুশীলন দেখে পছন্দ করেন। ২০০২-এ অনহƒর্ধ্ব-২০ খেললাম পাকিস্টল্টস্টুানে। একই বছর যাই কাতারে। তখনই আমি যোগ দেই ব্রাদার্সে। সে কাবে আমার বড় ভাই খেলতেন। সেই ২০০২ থেকেই আমি আছি প্রিমিয়ার লীগে।
২০০৩-এ বিকেএসপি চলে যাই। এসএসসি পরীা দিই। এরপর আবার ফিরে আসি ঢাকা লীগে। তিন মৌসুম খেলেছি ব্রাদার্সে। এরপর ২০০৭-০৮ থেকে আবাহনীতে। এখনো সেখানেই আছি।’
এর পরের গল্ক‹প্টপ্প তো সবার জানা। আবাহনীতে যোগ দিয়েই চলে আসেন আলোচনায়...
গৃহযু™¦ন্ধ!
আবাহনী সমর্থকদের জন্য এটা নিঃসন্দেহে দুঃসংবাদ! ধানমন্ডির এই কাবে খেললেও এমিলির সেই শৈশবের প্রিয় দল মোহামেডান। এ নিয়ে ছোটবেলায় অনেক ঝগড়া হতো ভাইদের সগ্ধেগ। তেমনি এক ঘটনার কথা শোনাচ্ছিলেন এমিলি, “সালটা আমার মনে নেই। তখন আবাহনীতে মুল্কপ্পল্ফুা ভাই খেলতেন। মোহামেডানে সাব্বির ভাই। তখন লীগের আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচের দিন মানেই আমাদের ঘরে ‘গৃহযু™¦ন্ধ’। আমরা ভাইরা তখন দুই ভাগে বিভক্তÑআবাহনী-মোহামেডান। একবার হলো কী, আমি বাঁশ কেটে তার মাথায় মোহামেডানের পতাকা লাগালাম। বাসার সামনে সেটা উড়তে থাকল। কিল্কপ্পস্টুু কিছুণ পরই আমার বড় ভাই এসে সেই বাঁশে ঝুলালেন আবাহনীর পতাকা। এ নিয়ে তো তুমুল যু™¦ন্ধ আমাদের মধ্যে। শেষ পর্যল্কপ্পস্টু বাবা সমাধান করলেন। দুই কাবের পতাকা উড়ল এক বাঁশে। মনে পড়লে এখনো হাসি পায়।’
নাম কাহিনী এবং স্টল্ট^পল্ফু ....
‘আমি যখন জল্প§ নিই তখন সম্রাট হোসেন এমিলি দেশসেরা স্টল্কল্ট্রাইকার। তাকে দেখেই বাবা আমার নাম রাখেন এমিলি। তবে সম্রাট হোসেন নয়, জাহিদ হোসেন। নিজের নাম রহস্যটা এভাবেই ব্যাখ্যা করলেন এই প্রজল্পে§র অন্যতম সেরা স্টল্কল্ট্রাইকার এমিলি।
তবে তিনি নিজে ভালো করেই জানেন, নামে কিছু যায়-আসে না। কাজই হলো আসল। তাই তো জীবনের ল্যটাও ঠিক করে ফেলেছেন তিনি, ‘আসলে অবাস্টল্টস্টুব স্টল্ট^পল্ফু দেখতে চাই না আমি। জানি আমার সীমাব™¦ন্ধতা। সব মিলিয়ে ভাবছি, দণি এশিয়ার সেরা স্টল্কল্ট্রাইকার হতে পারলেই আমি খুশি।’
আর জাতীয় দলের হয়ে টার্গেট?
Ñঅবশ্যই এসএ গেমস ফুটবলের সেরা। দণি এশিয়ান অঞ্চলে এক সময় বেশ দাপট ছিল আমাদের। কিল্কপ্পস্টুু দিন বদলে গেছে। আমি আবারো সেইদিন ফিরিয়ে আনার জন্য লড়তে চাই সামনে থেকে।
এর মধ্যে এমিলি জানালেন ভারতীয় লীগ থেকেও খেলার প্রস্টল্টস্টুাব এসেছিল তার। কিল্কপ্পস্টুু ব্যস্টল্টস্টু থাকায় জেসিটির সেই প্রস্টল্টস্টুাব ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। তবে সময়-সুযোগ হলে, আবারো প্রস্টল্টস্টুাব এলে ভেবে দেখবেন।
এবং কি™ব্দকেট
এমিলি যখন সত্যিকার অর্থেই ফুটবলের প্রেমে পড়েন, তখন দেশে ফুটবলের তেমন জোয়ার ছিল না। সবাই মেতেছিল কি™ব্দকেটেই। তারপরও চেয়েছিলেন পছন্দের খেলাটিতেই মেতে থাকতে। তবে দুঃখ হতো তার প্রিয় ফুটবলের দৈনদশা দেখেÑ‘দেখুন শুধু আমাদের এখানেই ফুটবলের সগ্ধেগ কি™ব্দকেটের তুলনা হয়। অন্য কোথাও সেটা নেই। জনপ্রিয়তায় বিশে^ ফুটবলের ধারেকাছে নেই কি™ব্দকেট। আমাদের দেশেও তো তাই ছিল। কিল্কপ্পস্টুু এখন বদলে গেছে। এখন আমি চাই না কি™ব্দকেট পিছিয়ে যাক, আসলে এগিয়ে যেতে হবে ফুটবলকে। এমনিতে ফুটবলের বাইরে তার প্রিয় খেলা কি™ব্দকেটই। যেমনটা বলছিলেনÑ‘সুযোগ পেলেই আমি কি™ব্দকেট খেলি। বিকেএসপিতে আমার দুই ব্যাচ জুনিয়র সাকিব আল হাসান। আমার পাশের রুমে থাকত সে। এখনো নিয়মিত যোগাযোগ হয় তার সগ্ধেগ। কথা বলি কি™ব্দকেট নিয়ে।
জাতীয় দল এবং ডিডো
এমনিতে আর্জেন্টোইন ফুটবলের ভক্ত তিনি। কিল্কপ্পস্টুু ব্রাজিলিয়ান ডিডোর ফুটবল শেখানোর প™¦ন্ধতিটা মু¹º¦ন্ধ করেছে এমিলিকেÑ‘আসলে অল্ক‹প্টপ্প কিছুদিনেই আমার মনে হচ্ছে, তিনি অসাধারণ কোচ। ডিডো বই পড়ে কোচ নন। খেলে তবে এসেছেন এ পর্যল্কপ্পস্টু। আমার বিশ^াস, তিনি আমাদের ফুটবলকে ঠিক পথে নিয়ে যাবেন। তবে অবশ্যই এ জন্য তাকে আমাদের সহযোগিতা করতে হবে। দায়ব™¦ন্ধ হতে হবে আরো। সালাউদ্দিন ভাই তো কথা রেখেছেন। মাঠে আবারো দর্শক নিয়ে এসেছেন। এখন সেই দর্শক ধরে রাখার দায়িÍ^টা আমাদের।’
আহঃ শৈশব!
পিরোজপুরের কলাখালীর সেই দিনগুলো এখনো টানে তাকে। যখনই একা থাকেন, ব্যক্তি আমি বড় হয়ে ওঠে, তখন মন চলে যায় সেই শৈশবে। আহ! শৈশব! ‘মানুষ কখনো তার জল্প§স্টল্ট’ান ভুলতে পারে না। আমিও মিস করি সেই দিনগুলো। এখন হয়তো আমাকে অনেকেই চিনছে। কিল্কপ্পস্টুু আমি আমার শৈশবের বল্কপ্প¦ন্ধু সুজন, কামরুলদের কাছে সেই এমিলি, উদয়কাঠি গ্রামের মানুষদের কাছে ইদ্রিস আলীর ছেলে। ওরা তাকিয়ে আছে আমার দিকে। মাঝে মধ্যে মন চায়, রাতের অল্কপ্প¦ন্ধকারে ঢাকা শহর ছেড়ে পালিয়ে যাই গ্রামে। কিল্কপ্পস্টুু জানি, আমার ব্যক্তিগত আবেগের চেয়ে দেশ বড়। আমাকে কিছু করতেই হবে বাবার জন্য, বল্কপ্প¦ন্ধুদের জন্য, দেশের জন্য।’
এমন করে ভাবেন যিনি, সেই এমিলির জন্য হয়তো সুন্দর আগামীই অপো করছে।
জাহিদ হোসেন এমিলি
জল্প§ তারিখ : ২০ ডিসেল্কম্ফ^র ১৯৮৭
জল্প§স্টল্ট’ান : কলাখালী, পিরোজপুর
বাবা : ইদ্রিস আলী
মা : হাওয়া বেগম
প্রিয় খেলা (ফুটবল ছাড়া) : কি™ব্দকেট
প্রিয় দল (দেশ) : মোহামেডান
প্রিয় দল (বিদেশ) : ম্যানইউ, বার্সা
প্রিয় খেলোয়াড় : লিওনেল মেসি, শহিদ আফি™ব্দদি
প্রিয় ব্যক্তিÍ^ : বাবা, মা
প্রিয় গায়ক : বালাম, হাবিব
প্রিয় : অভিনেতা: মোশরফ করিম, তিশমা
শখ : বল্কপ্প¦ন্ধুদের সগ্ধেগ ঘুরে বেড়ানো
প্রিয় খাবার : ভুনা খিচুড়ি
অবসরে : গান শোনেন, বই পড়েন
প্রিয় লেখক : হুমায়ুন আহমেদ
সাতচাড়া
1 day ago
No comments:
Post a Comment