বিপদ হলো আর্শিবাদ- কোথায় যেন কুড়িয়ে পেয়েছিলাম ছোট্ট অথচ মহামুল্যবান
এই বাক্য, মনে নেই। মাহাত্ম্যটা বুঝতে অবশ্য বেশ কিছুদিন লেগেছে! শুরুতে
হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলাম। এ আবার কেমন কথা? বিপদ আবার আর্শিবাদ হয় কী করে!
দুঃখ আর বিপদ ছাড়া জীবনের সব নতুন কিছুই ভালো। এই দুটো ব্যাপার মেনে নিতে
মন চায়না। তাহলে ‘মেনে নিতে না চাওয়া’ বিপদ কী করে উপহার হয়ে আসে আমাদের
যাপিত জীবনে!
জীবন কি আর জলের মতো সহজিয়া? বেঁচে থাকার পথ কি শুধুই ফুলে ফুলে সাজানো? না, বলেই হয়তো কোন এক নভেম্বরের শেষ দিনটায় উড়ে আসে দুঃসংবাদ। বিনা অপরাধে ফাঁসিও হয়ে যায় কখনো কারো! কেউ কিছু হয়তো কড়া ভাষাতেই কিছু বলে, কেউ আবার চুপ!
যখন ‘বিপদ’ নামের নাছোড়বান্দা আমার কাঁধে চেপে বসল ঠিক তখনই জানলাম- জীবনের অন্য এক মানে। সিন্দাবাদের ওই ভুত কাঁধে চেপে বসার পরই চোখের সামনে ভেসে উঠতে থাকল কিছু মুখ। কিছু মানুষের অবয়ব। কিছু হারিয়ে যাওয়া নাম! কাছের মানুষ দুরের মানুষ বুঝে নেওয়ার ক্ষণ! সত্যিই তো সুখ ভাগাভাগি করে নেওয়া যায়। কিন্তু দুঃখ ভাগাভাগির সময় দেখা মেলে কম মানুষেরই। সত্যিকারের বন্ধুর দেখা মেলে তখনই।
ব্যস্ততা নামের অজুহাতে ধুলো পড়ে গেছে সেই সম্পর্কগুলোয়! ভুলে বসে আছি প্রিয় মুখ, প্রিয় মানুষদের। কিন্তু কি আর্শ্চয্য হঠাৎ করেই বানের পানির মতো হুড়মুড় করে এলো মিষ্টি মিঠেস্মৃতির দল। মনে পড়ল দুলাল ভাইয়ের কথা। দুলাল মাহমুদ। মনে পড়ল সেইসব সংগ্রামের দিনের কথা। মনে পড়ল সুন্দর সব মুহুর্তের কথা। উনার হাত ধরেই অন্য অনেকের মতো আমারও সাংবাদিকতার হাতেখড়ি। দুলাল ভাইয়ের প্রশ্রয় আর পরিচর্যাতেই বেড়ে উঠা আমাদের একটা প্রজন্মের। দুঃসময়ে এমন একজনের কথাই তো মনে আসবে সবার আগে!
মানুষটির সাথে প্রথম কবে দেখা মনে করতে পারছিলাম না। তবে সেটা ১৯৯৭ কিংবা ১৯৯৮ হবে হয়তো। খেলার প্রতি ঝোঁক ছিল সেই ছোটবেলাতেই। সঙ্গে লেখালেখিও। তখন ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে ক্রীড়াজগত নামটা আকরাম খান-আমিনুল ইসলাম বুলবুলের মতোই পরিচিত। সেই পাক্ষিকে লেখা দিতে যাবো-ভাবতেই বুক কেঁপে উঠেছিল। সম্পাদকের রুমে যেতে সেই ভয়, আতংক দ্বিগুন হয়ে গেল! দু’ একটা আইডিয়ার কথা বললাম, লিখতে চাইলাম। সম্পাদক মুখ গম্ভীর কওে বললেন, ‘আর এটা জাহাঙ্গীর লিখবে।’ আরেকটা বললাম, ‘না, এটাও হবে না, রফিক ফুটবল নিয়ে লেখে। আপনি নতুন কিছু চিন্তা করেন।’
বুঝলাম এই ভদ্রলোকের মন জয় করতে হলে ভাবনাতেও নতুনত্ব চাই। আর সেটা সবার আগে। ব্যস শুরু হয়ে গেল আমার লড়াই। এ লড়াইয়ের হারবার পাত্র নই আমি। আর একটু একটুদুলাল ভাইয়ের প্রিয় হয়ে উঠতে থাকলাম।
এরপর দীর্ঘসময় উনার সানিধ্য পেয়েছি। আর তিনি হয়ে উঠেছেন আমাদের এক প্রজন্মের কাছে আদর্শ। কেন? তাহলে শুনুন-আমরা মানুষই বুঝি এমন, নিজের যোগ্যতার ভান্ডারে এক থাকলে দুই বলে স্বস্তি পাই। ক্ষমতার দাপট দেখানোটা তো রক্তে মিশে আছে। এমন এক সময়ে দুলাল ভাই উল্টো পথের এক মানুষ। নিজেকে সব সময় নৈপথ্যের মানুষ করেরাখতেই স্বচ্ছন্দ্য উনার। অথচ কী গুন নেই? অসাধারন শব্দ চয়নে লিখতে জানেন। সম্পাদনায় তিনি যে কতোটা পারফেকশনিষ্ট সেটাতো তার লেখা বই আর ক্রীড়াজগতই প্রমান। গবেষণাধর্মী কাজও করেছেন অনেক।
আর ক্ষমতার দাপট বলে কিছু নেই দুলাল ভাইয়ের অভিধানে। না হলে প্রাতিষ্ঠানিকভাবেও আরো অনেক অনেক দুর যেতে পারতেন তিনি।
তাতে যে কোন আক্ষেপ নেই উনার সেটা দু’ এক কথা বললেই আঁচ করা যায়। অন্যরা যখন ¯্রােতে গা ভাসিয়ে দিয়ে আয়েশী জীবন খুঁজে নিয়েছে তখন তিনিসংগ্রাম করে বেঁচে আছেন, অহর্নিশ। তাই এই নষ্ট সময়ে যখন সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবো-যাচ্ছি করছে তখন প্রানভরে নিঃশ্বাস নিচ্ছেন দুলাল ভাই।তৃপ্তির বেঁচে থাকা।
এইতো কিছুদিন আগে দেখা হল। মাঝে অনেকটা সময় কেটে গেছে। তিনি সেই আগের মতোই আছেন। নির্লোভ এই মানুষটি ভাল আছেন, বেঁচে থাকার মতো মাথা উচু করে বেঁচে আছেন, প্রতিটা মুহুর্ত!
দুলাল ভাই আপনার জন্য অতলান্ত শ্রদ্ধা। আপনার মতো মানুষরা আছে বলেই হয়তো এখনো অন্ধকার সুরঙ্গের শেষে আশার ছোট্ট প্রদীপটি এখনো জ্বলে আছে। এখনো ‘‘সৎ’’ ‘‘নির্লোভ’’ শব্দ দুটো যাদুঘরে চলে যায়নি। আপনারা আছেন বলেই হয়তো- আমরা ভাল আছি, বেঁচে আছি!
শুভ জন্মদিন দুলাল ভাই...
জীবন কি আর জলের মতো সহজিয়া? বেঁচে থাকার পথ কি শুধুই ফুলে ফুলে সাজানো? না, বলেই হয়তো কোন এক নভেম্বরের শেষ দিনটায় উড়ে আসে দুঃসংবাদ। বিনা অপরাধে ফাঁসিও হয়ে যায় কখনো কারো! কেউ কিছু হয়তো কড়া ভাষাতেই কিছু বলে, কেউ আবার চুপ!
যখন ‘বিপদ’ নামের নাছোড়বান্দা আমার কাঁধে চেপে বসল ঠিক তখনই জানলাম- জীবনের অন্য এক মানে। সিন্দাবাদের ওই ভুত কাঁধে চেপে বসার পরই চোখের সামনে ভেসে উঠতে থাকল কিছু মুখ। কিছু মানুষের অবয়ব। কিছু হারিয়ে যাওয়া নাম! কাছের মানুষ দুরের মানুষ বুঝে নেওয়ার ক্ষণ! সত্যিই তো সুখ ভাগাভাগি করে নেওয়া যায়। কিন্তু দুঃখ ভাগাভাগির সময় দেখা মেলে কম মানুষেরই। সত্যিকারের বন্ধুর দেখা মেলে তখনই।
ব্যস্ততা নামের অজুহাতে ধুলো পড়ে গেছে সেই সম্পর্কগুলোয়! ভুলে বসে আছি প্রিয় মুখ, প্রিয় মানুষদের। কিন্তু কি আর্শ্চয্য হঠাৎ করেই বানের পানির মতো হুড়মুড় করে এলো মিষ্টি মিঠেস্মৃতির দল। মনে পড়ল দুলাল ভাইয়ের কথা। দুলাল মাহমুদ। মনে পড়ল সেইসব সংগ্রামের দিনের কথা। মনে পড়ল সুন্দর সব মুহুর্তের কথা। উনার হাত ধরেই অন্য অনেকের মতো আমারও সাংবাদিকতার হাতেখড়ি। দুলাল ভাইয়ের প্রশ্রয় আর পরিচর্যাতেই বেড়ে উঠা আমাদের একটা প্রজন্মের। দুঃসময়ে এমন একজনের কথাই তো মনে আসবে সবার আগে!
মানুষটির সাথে প্রথম কবে দেখা মনে করতে পারছিলাম না। তবে সেটা ১৯৯৭ কিংবা ১৯৯৮ হবে হয়তো। খেলার প্রতি ঝোঁক ছিল সেই ছোটবেলাতেই। সঙ্গে লেখালেখিও। তখন ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে ক্রীড়াজগত নামটা আকরাম খান-আমিনুল ইসলাম বুলবুলের মতোই পরিচিত। সেই পাক্ষিকে লেখা দিতে যাবো-ভাবতেই বুক কেঁপে উঠেছিল। সম্পাদকের রুমে যেতে সেই ভয়, আতংক দ্বিগুন হয়ে গেল! দু’ একটা আইডিয়ার কথা বললাম, লিখতে চাইলাম। সম্পাদক মুখ গম্ভীর কওে বললেন, ‘আর এটা জাহাঙ্গীর লিখবে।’ আরেকটা বললাম, ‘না, এটাও হবে না, রফিক ফুটবল নিয়ে লেখে। আপনি নতুন কিছু চিন্তা করেন।’
বুঝলাম এই ভদ্রলোকের মন জয় করতে হলে ভাবনাতেও নতুনত্ব চাই। আর সেটা সবার আগে। ব্যস শুরু হয়ে গেল আমার লড়াই। এ লড়াইয়ের হারবার পাত্র নই আমি। আর একটু একটুদুলাল ভাইয়ের প্রিয় হয়ে উঠতে থাকলাম।
এরপর দীর্ঘসময় উনার সানিধ্য পেয়েছি। আর তিনি হয়ে উঠেছেন আমাদের এক প্রজন্মের কাছে আদর্শ। কেন? তাহলে শুনুন-আমরা মানুষই বুঝি এমন, নিজের যোগ্যতার ভান্ডারে এক থাকলে দুই বলে স্বস্তি পাই। ক্ষমতার দাপট দেখানোটা তো রক্তে মিশে আছে। এমন এক সময়ে দুলাল ভাই উল্টো পথের এক মানুষ। নিজেকে সব সময় নৈপথ্যের মানুষ করেরাখতেই স্বচ্ছন্দ্য উনার। অথচ কী গুন নেই? অসাধারন শব্দ চয়নে লিখতে জানেন। সম্পাদনায় তিনি যে কতোটা পারফেকশনিষ্ট সেটাতো তার লেখা বই আর ক্রীড়াজগতই প্রমান। গবেষণাধর্মী কাজও করেছেন অনেক।
আর ক্ষমতার দাপট বলে কিছু নেই দুলাল ভাইয়ের অভিধানে। না হলে প্রাতিষ্ঠানিকভাবেও আরো অনেক অনেক দুর যেতে পারতেন তিনি।
তাতে যে কোন আক্ষেপ নেই উনার সেটা দু’ এক কথা বললেই আঁচ করা যায়। অন্যরা যখন ¯্রােতে গা ভাসিয়ে দিয়ে আয়েশী জীবন খুঁজে নিয়েছে তখন তিনিসংগ্রাম করে বেঁচে আছেন, অহর্নিশ। তাই এই নষ্ট সময়ে যখন সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবো-যাচ্ছি করছে তখন প্রানভরে নিঃশ্বাস নিচ্ছেন দুলাল ভাই।তৃপ্তির বেঁচে থাকা।
এইতো কিছুদিন আগে দেখা হল। মাঝে অনেকটা সময় কেটে গেছে। তিনি সেই আগের মতোই আছেন। নির্লোভ এই মানুষটি ভাল আছেন, বেঁচে থাকার মতো মাথা উচু করে বেঁচে আছেন, প্রতিটা মুহুর্ত!
দুলাল ভাই আপনার জন্য অতলান্ত শ্রদ্ধা। আপনার মতো মানুষরা আছে বলেই হয়তো এখনো অন্ধকার সুরঙ্গের শেষে আশার ছোট্ট প্রদীপটি এখনো জ্বলে আছে। এখনো ‘‘সৎ’’ ‘‘নির্লোভ’’ শব্দ দুটো যাদুঘরে চলে যায়নি। আপনারা আছেন বলেই হয়তো- আমরা ভাল আছি, বেঁচে আছি!
শুভ জন্মদিন দুলাল ভাই...
No comments:
Post a Comment