হাত কাপছে, লিখতে
পারছি না! খবরটা শোনার পর
থেকেই মন বিষন্ন হয়ে আছে।
আমাদের সবার প্রিয় সঞ্জীব চৌধুরী
মৃতু্র সঙ্গে লড়ছেন এখন।
বাপ্পা মজুমদারের সাথে
একটু আগে কথা বলে জানলাম-
ব্রেন হ্যামারেজ হয়েছে
আমাদের সবার প্রিয় সঞ্জীব দ্যার।
অ্পোলো
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন
দলছুটের এই শিল্পী। আমাদের কাছে
অবশ্য সাংবাদিক হিসেবেই
পরিচিত তিনি। ভোরের কাগজ এর
সেই সব দিনের কথা মনে
পড়ছে এখন। হাসি খুশি আড্ডা
প্রিয় আমাদের সঞ্জীব
দ্যা।
আগের দিন রাতে নাকি প্রচন্ড
মাথা ব্যাথা করছিল।
বাসায় চিকিৎসা চলেছে।
পরে অবস্থা অবনতির
দিকে গেলে নিয়ে যাওয়া হয়
হাসপাতালে।
আপডেট:১৭ নভেম্বর দুপুর
২টা
তানভীর তারেক জানালো
সঞ্জীব দ্যা আর নেই! বিডি
নিউজেও দেখলাম একই খবর। সামহোয়ার
ইন ব্লগেও
দেখলাম এনিয়ে অমি রহমান পিয়ালের
লেখা।
কিছুতেই বিশ্বাস করতে
পারছি না এই খবর। না,
আমি হয়তো ভুলই শুনেছি।
আপডেট: ১৭ নভেম্বর রাত
১০টা
না, মারা যাওয়ার খবরটি নিছকই
গুজব। তিনি আছেন। এখনও অচেতনভাবে
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে
আছেন তিনি। চোখ মেলছেন না।
ডাক্তারদের বেধে দেয়া
৭২ ঘন্টা
সময়ের ২৪ ঘন্টা কেটে গেছে।
আশাবাদী হওয়ার মতো কিছুই শোনাতে
পারছেন না কেউ। সঞ্জীব দ্যার
তিন বছর বয়সী মেয়ে কিংবদন্তীর
জন্য মনটা হুহ করে উঠছে!
আপডেট: ১৮ নভেম্বর সকাল
১০টা
আজও লাইফ সাপোর্ট
দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা
হয়েছে সঞ্জীব দ্যাকে।
তিনি যে অবস্থাতে আছেন, সেখান
থেকে একমাত্র মিরাকল
হলেই নাকি ফেরা সম্ভব। তাই
যেন হয়। আবার সেই সঞ্জীব
চৌধুরীকে ফিরে পেতে চাই আমরা।
আপডেট ১৮ নভেম্বর: রাত
৮টা
এক জন বলছিলেন কাল সকালেই
নাকি শুনতে হবে না শুনতে
চাওয়া সেই খবর। খুলে ফেলা
হবে ওই ভেন্টিলেটর!
এপোলো থেকে আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতালে ট্রান্সফার
করার কথা ভাবা হচ্ছে ।
ভাল লাগছে না কিছুই!
আপডেট ১৮ নভেম্বর: রাত
১১টা
স্যাটালাইট টিভি চ্যানেল
এটিএন বাংলায় সঞ্জীব
চৌধুরীর জন্য সাহায্যের
আবেদন করা হয়েছে । স্বপ্নবাজ
এই মানুষটির
পাশে এসে দাড়াতে পারেন আপনিও।
বন্ধুরা টাকা পাঠাতে
পারেন এই অ্কাউন্টে...
শুভাশীষ মজুমদার বাপ্পা
স্ট্যাণ্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক
সঞ্চয়ী হিসাব নং:১৮-১৩৬০৪০৩০-০১
আপডেট: ১৯ নভেম্বর সকাল
৯.৩০মি.
মোবাইল বন্ধ করে ঘুমিয়েছিলাম। না হলে রাতেই হয়তো
খবরটা পেতাম। প্রিয়
সঞ্জীব দ্যা আর নেই! সবার
শুভকামনা আর প্রার্থনা
ব্যর্থ করে দিয়ে এই মানুষটি
কাল রাত ১২.১০ মিনিটে
চলে গেছেন না ফেরার দেশে।
রাতে ডাক্তাররা খুলে
নিয়েছেন লাইফসাপোর্ট। সঙ্গে সঙ্গেই
শেষ ৪৫ বছরের এক রঙীন
জীবন...
.........................
দ্য সঞ্জীব
চৌধুরী আনলিমিটেড
টোকন ঠাকুর
কিংবদন্তী একদিন বড়
হয়ে যাবে
। কিংবদন্তী
একদিন বুঝতে
শিখবে, কিংবদন্তী
কাকে বলে?
কেন মানুষ
কিংবদন্তী হয়ে যায়? কেন মানুষ
মুখে মুখে
ফেরা জনশ্রুতির
তাৎপর্য
গ্রহণ করে?...
কফিন বাকশের
দিকে তাকানো
ভাবলেশহীন শিশু,শিশুটি কি জানে
কফিনের মধ্যে
যে ঘুমিয়ে
আছে, সে
কে? সে
কেন বাসায়
না-ফিরে
ঐ বাকশের
মধ্যে গিয়ে
চুপচাপ শুয়ে
আছে? শুয়ে
থাকা মানুষটি
বাবা, না
সঞ্জীব চৌধুরী?
সঞ্জীব চৌধুরী
কে ছিলেন?
কি ছিল
তার অন্তরের
কথা, স্বপ্নের
কথা? কী
ছিল তার
দাহ? কেনো
এতো অগ্নিময়
জলের বুদবুদ
হয়ে ফেটে
যাওয়া? কোন
ভূবনে ছিল
তার স্বপ্নের
পাখি?
কিংবদন্তী একদিন জানতে
পারবে,এখানে
অন্ধকার ছিল,পরম্পরার ।
তার বাবা
সেই অন্ধকারে
জোনাকি হইয়ে
গেছে ।
সে একদিন
বুঝতে পারবে,
এখানে অনেক
পাথর ছিল
,তার বাবা
যৌবনের সমস্ত
শক্তি ঢেলে
পাথর সরাতে
চেয়েছে, প্রেমতীব্র
পথ তৈরী
করতে চেয়েছে
। কিংবদন্তী
একদিন শুনতে
পারবে, বাতাসে
রঙ্গীন সুর
ছড়িয়ে আছে,
কারন সঞ্জীব
চৌধুরী গান
গাইত ।
ভয়াল নৈঃশব্দে
শব্দ ছড়িয়ে
সঞ্জীব চৌধুরী
চলে গেছে
। শাদা
শূন্যতায় মধুবনের রঙ ছড়িয়ে গেছে,
আলাপের মধ্যে
কবিতা পুঁতে
রেখে গেছে
। এখানে
অনেক বিচ্ছিন্নতা
ছড়ানো বলে,
তার বাবা
অনেক গল্প
রেখে গেছে
।
রাত্রি গভীর হলেও,
যে- রাতে
কিংবদন্তীর ঘুম আসবেনা, যখন সে
খুলে খুলে
দেখবে এলবাম-ভর্তি এক
মুখ, হাওড়-প্রদেশের সেই
মুখই... সঞ্জীব
চৌধুরীর মুখ,
কিংবদন্তী নিশ্চয়ই টের পাবে,বহুদিন
আগে তার
বাবাই কিংবদন্তী
হয়ে গেছে
। এমনকি
তার জন্মের
আগেই কিংবদন্তী
হয়ে যায়
মিছিলের ,কবিতার,
গানের দলছুট
সঞ্জীব চৌধুরী
। এই
ঠাঠা- মরার
দেশে সঞ্জীব
চৌধুরী বড়
বেশি অপরাধী,
কারন তার
ভালোবাসার ক্ষমতা ছিল । কারন,
সে ভালোবাসত
। কারন
এই পোশাকি
সিস্টেমের দেশে সঞ্জীব চৌধুরী আপন
অস্তিত্বের স্বাধীনতা ঘোষনা করেছে ।
এই ফাঁকা-ফাঁকা মন্দির-মসজিদ-গির্জার
দেশে , সঞ্জীব
চৌধুরী ছিন্নমুল
মানুষের বাসস্থানের
ভাবনা মাথায়
রেখেছে ।
নিরন্নের, অন্ন ও পানীয়ের অধিকারের
কথা বলার
জন্য, সাহসে,
বুক টানটান
করে রাজপথে
দাঁড়িয়ে থেকেছে । কিংবদন্তী একদিন
জানবে, মেডিকেল
কলেজের গবেষনায়
তার বাবার
শরীর কাজে
লেগেছিল ।
এখানে রয়ে
গেছে সঞ্জীব
চৌধুরীর কংকাল...
হয়তো আগন্তুকের
সঙ্গে আড্ডা
দিতে চায়ও,
নতুন একটি
কবিতা নিয়ে,
গান নিয়ে
মেতে উঠতে
চায় ।
মা বকা
দিলে, হয়তো
একদিন খুব
মনখারাপ হলে
আমাদের কিংবদন্তী
কাউকে না
বলে একা
একাই চলে
যাবে
মেডিকেল কলেজের দিকে
। সে
কি বাবার
কংকালের সঙ্গে
কথা বলবে-
'বাবা আমার মন
ভালো নেই,
তুমি একটা
গান গাও
তো '
আমরা কিংবদন্তীর পেছনে
পেছনে যাব
এবং লক্ষ
রাখব, দেখব,
বাবার কংকাল
মেয়ের আবদার
রাখে কিনা?
কংকাল কি
কথা রাখবে,
যখন সঞ্জীব
চৌধুরীর কংকাল?
আমরা জানি সঞ্জীব
চৌধুরী কিংবদন্তী
ছিলেন...
...................................
@ কিংবদন্তী মেয়েটির বয়স ৪, সঞ্জীব
দা'র
সন্তান। আর
ক্ঙ্কালটা এখনো ঢাকা মেডিকেলে সংরক্ষিত...